সারা বিশ্বে করোনা (কোভিড-১৯) ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়লেও থেমে নেই দক্ষিণ এশিয়ার দুই চীর বৈরি দেশ পাকিস্তান-ভারতের সীমান্ত সংঘর্ষ। মুলত বিতর্কিত কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে সীমান্ত সংঘর্ষ ভয়াবহ আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার কিরনী সেক্টরের শাহপুরের কাছে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ব্যাপক গোলা বর্ষণ এবং মর্টার সেলের হামলা চালায় পাক বাহিনী।
এতে ভারতের এক সেনা নিহত এবং অপর দুই সেনা মারাত্বকভাবে আহত হন। সীমান্তের ওপার থেকে একাধিক ভারতীয় সেনা ছাউনি লক্ষ্য করে বিনা উস্কানীতে অবিরাম গুলি বর্ষণ করা শুরু করে পাকিস্তান। যদিও ভারতীয় সেনারা তাৎক্ষণিকভাবে এর পাল্টা শক্ত জবাব দিতে থাকে। ভারতের প্রতিরক্ষা দপ্তরের তথ্যমতে, বিগত ছয় মাসে পাকিস্তান সেনারা দুই হাজারের অধিক বার কাশ্মীর সীমান্তে লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) বরাবর হামলা চালিয়েছে। ২০২০ সালের জানুয়ারির শুরু থেকে চলতি জুন পর্যন্ত কাশ্মীর সীমান্তে ভয়ানক যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
তাদের দেয়া তথ্যমতে, ২০২০ সালের চলতি জুন মাসের প্রথম ১০ দিনেই ১১৪ বার সীমান্তে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান সেনারা। যেখানে কিনা ২০১৯ সালে গোটা জুন মাসে ১৮১ বার হামলা চালানো হয়েছিল পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এবং ২০১৮ সালে জুন মাসে হামলা হয়েছিল মাত্র ১৮ বার। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, ২০১৮ সালে যত হামলা হয়, চলতি বছরে শুধু জুন মাসেই তার চেয়ে বেশি হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান সেনারা। মুলত ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে পাক-ভারত কাশ্মীর সীমান্ত।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিগত ১৬ বছরের মধ্যে ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি ৩১৬৮ বার সীমান্ত হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান সেনারা। যা কিনা ২০০৩ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ আকারের সীমান্ত হামলা। তাছাড়া পাকিস্তান সেনা বাহিনী ২০১৮ সালে ১,৬২৯ বার সীমান্তে গোলা বর্ষণ এবং মর্টার হামলা চালিয়েছিল। তবে সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে চলতি ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ১০ই জুন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২ হাজার বার কাশ্মীরের লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) বরাবর হামলা চালিয়েছে পাক বাহিনী।