ওয়েস্ট ম্যাথুসনের পরিবার জানায়, প্রতিদিনই সিংহ দু’টিকে নিয়ে হাঁটতে বেরোতেন তিনি। বুধবারও নিজের লজের পাশেই দুই সিংহের সঙ্গে হাঁটতে বেরোন তিনি। পিছনেই গাড়ি নিয়ে তাঁদের অনুসরণ করছিলেন ওয়েস্টের স্ত্রী গিল। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই উত্তেজিত হয়ে ওঠে সিংহ দু’টি। এরপর আচমকাই ওয়েস্টের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি সিংহ দু’টিকে আটকানোর অনেক চেষ্টা করেন। গিলও পিছন থেকে সিংহ দু’টির নজর ঘোরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বন্য পশু দু’টির হাত থেকে বাঁচানো যায়নি তাঁকে। ওয়েস্ট ম্যাথুসনকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয় তাঁরই পালিত দু’টি সাদা সিংহ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
অন্যদিকে ম্যাথুসনের আত্মীয় তেহরি ফার্গুসন বলেছেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে ওয়েস্ট নিজেকে যতটা কমবয়সী ভাবতেন, তাঁর বয়স তত কম ছিল না। ঠিক কী হয়েছিল আমরা সেবিষয়ে এখনও নিশ্চিত নই। তবে ঘটনাটি খুবই ভয়ানক।’ ম্যাথুসন পরিবারের আইনজীবী মারিনা বোথা নিজের বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘একজন স্বামী, বাবা ও দাদুকে হারিয়ে গোটা পরিবার বিধ্বস্ত। তবে তাঁরা এটা ভেবে নিজেদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন যে, ওয়েস্ট যেভাবে চেয়েছিলেন সেভাবেই নিজের জীবন কাটিয়েছেন। প্রকৃতির কোলে নিজের সিংহদের সঙ্গে থাকাই তাঁর সবচেয়ে পছন্দ ছিল।’
এক বন্যপ্রাণ সংরক্ষণবাদী নাম তার ওয়েস্ট ম্যাথুসন। যিনি আঙ্কল ওয়েস্ট নামেও পরিচিত ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় নিজের পালিত দুই সিংহের আক্রমণেই প্রাণ হারালেন তিনি। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ আফ্রিকার লিপোপো প্রদেশের লায়ন ট্রি টপ লজে। এই লজটি ম্যাথুসন পরিবারেরই সম্পত্তি। জানা গিয়েছে বেশ কয়েকবছর আগে সাদা সিংহ দু’টিকে শিকারিদের হাত থেকে উদ্ধার করেছিলেন ওয়েস্ট। ছোট থেকে নিজের হাতে দু’জনের লালন পালন করেছিলেন। তার কোলেপিঠে চড়েই বড় হয়েছে দু’জনে। সবমিলিয়ে সিংহ দু’টিকে নতুন জীবন দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ম্যাথুসন।
এটাই অবশ্য প্রথম নয়। এর আগেও সাদা সিংহ দু’টির হামলায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ২০১৭ সালে লজ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল সিংহ দু’টি। লজের পাশেই এক জায়গায় কর্মরত ওই ব্যক্তির উপর হামলা চালানোয় মৃত্যু হয় তাঁর। সেসময় ম্যাথুসন পরিবার আশ্বাস দিয়েছিল সিংহ দু’টিকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি।