ইসরায়েলের পার্লামেন্টে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সরাতে রবিবার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোটে বিরোধী জোট বিজয়ী হলে নেতানিয়াহুর দীর্ঘ এক যুগের শাসনের পতন হবে। ক্ষমতা হারানোর চাপ ও কারাদণ্ডের ভয়ে আছেন ইসরায়েলের সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা এই প্রধানমন্ত্রী।
ক্ষমতা হারালে দুর্নীতির অভিযোগে নেতানিয়াহুর ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। ইসরায়েলের ডেমোক্রেসি রিসার্চ সেন্টারের সংবিধান বিষয়ক আইনজীবী আমির ফুক্স এ কথা জানিয়েছেন।
দুর্নীতি, তহবিল তসরুফ ও প্রতারণার অভিযোগে ২০২০ সালের মে মাস থেকে আদালতে নেতানিয়াহুর বিচার চলছে। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার কারণে এত দিন আইনি দায়মুক্তি থাকায় তাকে আটক করা যাচ্ছিল না। কিন্তু ক্ষমতা চলে যাওয়ার পর তার শাস্তি ভোগ অবধারিত হয়ে যাবে।
ফুক্স আরো বলেন, দুই বছর ধরে এই প্রশ্ন সামনে ছিল যে নেতানিয়াহু নিজেকে বিচারের ঊর্ধ্বে রাখার জন্য কি সংবিধান সংশোধন করবেন? কিন্তু এত দিন তিনি তা করেননি এবং শিগগিরই ক্ষমতা চলে যাওয়ার পর তিনি আইনি দায়মুক্তি হারাবেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে তাতে তার সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
ইসরায়েলের পাবলিক প্রসিকিউটর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক মামলায় তিনটি চার্জশিট দিয়েছেন। ২০০৯ সাল থেকে একটানা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা নেতানিয়াহু এ পর্যন্ত নিজের বিচারকাজকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।
ইসরায়েলের সংসদ স্পিকার ইয়েরিভ লেভিন গত মঙ্গলবার এক টুইটে বলেছেন, নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নেতানিয়াহুর ১২ বছরের শাসনের সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। ওই টুইট বার্তায় তিনি বলেন, অবশেষে এটা হচ্ছে। ইসরায়েলের নাগরিকদের কল্যাণে ঐক্যের সরকার শপথ নিতে যাচ্ছে।
রবিবার আরো পরের দিকে পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হওয়ার কথা। এর মাধ্যমে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাজনৈতিক অচলাবস্থার সমাপ্তি ঘটবে বলেও আশা করা হচ্ছে। এর আগে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গঠিত নতুন জোটকে তিনি ‘গণতন্ত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নির্বাচনী জালিয়াতি’র ফলাফল বলে উল্লেখ করেছেন।
চুক্তি অনুযায়ী, এই জোটের নেতৃত্বে থাকবে ডানপন্থী ইয়ামিনা পার্টি। সরকার গঠনের পর এই দলের প্রধান নাফতালি বেনেট প্রথম দুই বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের পর ইয়ার লাপিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
ইসরায়েলের ১২০ আসনের নেসেটে সরকার গঠন করতে অন্তত ৬১ আসনের দরকার হয়। কিন্তু গত নির্বাচনেও এককভাবে সেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দল। ফলে এবারও জোট সরকারের দিকেই ঝুঁকতে হচ্ছে ইসরায়েলিদের।