পৈতৃক সম্পত্তিতে হিন্দু মেয়েদের সমান অধিকার দিয়ে এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এই রায় অনুযায়ী, পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাবে মেয়েরাও।
হিন্দু-আনডিভাইডেড ফ্যামিলি প্রপার্টিতে মেয়েদের অধিকারের পক্ষে রায় দিয়েছেন বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
২০০৫ সালের আগে অর্থাৎ হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের সংশোধনী কার্যকর হওয়ার আগেও যদি কারো বাবা মারা গিয়ে থাকেন, তাহলেও তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারেন সেই ব্যক্তির মেয়েরা।
রায় দেওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলেন, ‘কন্যা সন্তান চিরকালই প্রিয় কন্যা সন্তান হয়েই থাকেন। নারীর জন্ম যে সালেই হয়ে থাক ২০০৫ সালের সংশোধিত এই আইন অনুযায়ী মেয়েরা বাবার সম্পত্তিতে হিন্দু আইন অনুযায়ী সমান অধিকার পাবেন।
২০০৫ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের সংশোধনী কার্যকর হওয়ার আগে যাঁদের বাবা-মা মারা গেছেন, তারাও কি পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাবেন? এই নিয়ে একাধিক মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে।
২০১৬ সালে প্রকাশ বনাম ফুলবতী মামলা এই আইন কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছিল আদালত। আবার ২০১৮ সালের অন্য আরেকটি মামলার প্রেক্ষিতে এই আইন কার্যকর হবে বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ২০০৫ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের সমানাধিকার আছে। রায় দিয়ে বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, ‘একটা মেয়েই সারাজীবন বাবা-মায়ের আদরের মেয়ে হয়ে থাকেন। কিন্তু সম্পত্তির মালিক বেঁচে থাকুক আর না থাকুক, সেই সম্পত্তির উপর মেয়ের সারাজীবন অধিকার থাকবেই।
সংশোধনের সময় বাবা বেঁচে থাকলে বা না থাকলেও সকল মেয়েদেরই এই সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
যেহেতু শীর্ষ আদালত এই সংক্রান্ত বিভ্রান্তি কাটিয়ে দিল আজকের রায়ের মাধ্যমে, তাই সারা দেশে কন্যা সন্তানের আইনি উত্তরাধিকার সংক্রান্ত যে সমস্ত মামলা রয়েছে, সেগুলোর যেন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়।