বারবার ভারতের সঙ্গে বৈঠক এবং সেনা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েও গলওয়ানের বহু সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু থেকে একচুলও নড়েনি চীনের সেনারা। প্যাংগং শো, গোগরা, হট স্প্রিং-সহ গলওয়ান নদীর ধার দিয়ে এখনও বহু সেনা মোতায়েন করে রেখেছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। ভারতের বহু কূটনৈতিক চাপ সত্ত্বেও সেনা প্রত্যাহারে বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখায়নি বেইজিং। কিন্তু এবার না চাইতেও চীনকে গলওয়ান নদীর ধার থেকে সেনা সরাতে হচ্ছে।
সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে গলওয়ান নদীর তীরে বহু চীনা সেনা মোতায়েন আছে। কিন্তু গত কয়েকদিনে গলওয়ান নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। আসলে আকসাই চীন থেকে উৎপন্ন এই নদীটি বরফগলা পানিতে পুষ্ট। আর এই সময় তাপমাত্রা হঠাৎ করে অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় বরফ গলছে দ্রুত। যার ফলে গলওয়ান নদীর তীরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
খানিকটা প্রত্যাশিতভাবেই গলওয়ান নদীতে এখন বন্যা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সেখানে অবস্থিত চীনের সেনা ছাউনিগুলো ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বাধ্য হয়ে চীন তাদের সেনাদের সেই সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু থেকে পিছিয়ে নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
মধ্যেই কয়েকটি চীনা সেনা ছাউনি ভেসে গেছে। ভারতীয় সেনার এক কর্মকর্তার দাবি, চীন ইতিমধ্যেই গলওয়ানের তীর থেকে সেনা সরাতে শুরু করেছে। আসলে, যেভাবে নদীর পানি বাড়ছে, তাতে গলওয়ানের তীরে কোনও কিছুই নিরাপদ নয়। যে কোনও সময় ভেসে যেতে পারে বাদবাকি ছাউনিগুলোও। যত দিন যাবে, পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হবে। আপাতত প্রকৃতির এই মার সামলাতেই নাজেহাল চীনা বাহিনী।
গত ১ জুন সীমান্তের ওপারে মালডোতে চীনা সেনার ছাউনিতে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে দুই দেশের সেনার ক্রপ কমান্ডার পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠক হয়। কিন্তু ১২ ঘণ্টার সেই বৈঠকের পরও কোনও সমাধানসুত্রে পৌঁছাতে পারেননি দুই দেশের সেনাবাহিনীর কমান্ডাররা। এখনও গলওয়ান এবং প্যাংগং লেক সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়নি চীন। কিন্তু গলওয়ান নদীর পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে তাদের হয়তো এমনিই সেনা প্রত্যাহার করতে হতে পারে।