সিরাজুর রহমানঃ পাকিস্তানের জিও টিভি নিউজের তথ্যমতে, পাকিস্তানে সরকারি ও বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোতে কর্মরত পাইলটের মধ্যে ৩০% পাইলট ভূয়া বা জাল লাইসেন্সে কাজ করে যাচ্ছেন। আর সাম্প্রতিক সময়ে এ রকম ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এসেছে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে। পাকিস্তান পার্লামেন্টে দেশটির বিমানমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার জানিয়েছেন, বর্তমানে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) সহ বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোতে কর্মরত বৈমানিকদের মধ্যে ৩০% ভূয়া বা জাল লাইসেন্স সংগ্রহ করে দীর্ঘ দিন থেকে চাকুরি করে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে আবার একটি বড় অংশ অবৈধ উপায়ে এবং মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিমান সংস্থাগুলোতে পাইলটের কাজ করে যাচ্ছেন বহাল তবিয়তে।
আর এই ৩০% অবৈধ পাইলট বিমান প্রশিক্ষণ পরীক্ষায় পাশ না করেই জাল সনদ এবং লাইসেন্স সংগ্রহ করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর দেশী সরকারি ও বেসরকারি বিমান সংস্থাতে পাইলট হিসেবে কাজ করছেন। মুলত সাম্প্রতিক সময়ে এয়ারবাস এভিয়েশন কর্পোরেশনের সাথে যৌথভাবে করা এক গোপন তদন্তে বেড়িয়ে আসে অতি ভয়ঙ্কর জালিয়াতির এসব তথ্য।
পাকিস্তানের বিমানমন্ত্রী পার্লামেন্টে জানান, পাকিস্তানে বর্তমানে ৮৬০ জন পাইলট রয়েছেন। এদের মধ্যে ২৬২ জন নিজেরা পরীক্ষায় অংশ নেননি। তারা অন্যজনকে পরীক্ষায় বসিয়েছেন। তিনি আরো জানান, যাদের জাল লাইসেন্স রয়েছে তারা অনেকেই উড়োজাহাজ ঠিকভাবে চালাতেই পারেন না। আবার অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে এসব অবৈধ ও অদক্ষ পাইলট নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আর খেয়াল করার মতো একটি বিষয় হলো যে, বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় পাকিস্তানে বেসামরিক বিমান দূর্ঘটনার এবং ক্রাসের হার অত্যন্ত বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে পিআইএ এর একটি এয়ারবাস-৩২০ বানিজ্যিক বিমান গত ২২শে মে করচীর জিন্নাহ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের নিকটেই আবাসিক এলাকায় ক্র্যাশ করেছিল। এদিকে করাচিতে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাইলটরা করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিভ্রান্ত ছিলেন এবং তারা বিমান পরিচালনায় মনোযোগ না দিয়ে আলাপচারিতায় ব্যস্ত ছিলেন। বিমানটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হলে ৯৭ জন যাত্রী মৃত্যুবরণ করেন এবং সৌভাগ্যক্রমে দুই জন যাত্রী প্রাণে বেঁচে যান।