কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় সাক্ষাৎকার দেয়া বাংলাদেশি রায়হান কবিরের ভিসা বাতিল করেছে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন। সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির পুলিশ মহাপরিদর্শক তানশ্রি আবদুল হামিদ বদর।
রায়হান কবিরের ওয়ার্ক পারমিট (ভিসা) বাতিল করেছে ইমিগ্রেশন বিভাগ। সুতরাং, তাকে তার নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর আগে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
নোটিশে আল-জাজিরা টেলিভিশনকে দেয়া তার সাক্ষাৎকারের বিষয়ে দেশটির অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩ এর ধারায় তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া অভিবাসন বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে রায়হান কবিরের ছবি, বয়স, তার পাসপোর্ট নম্বর, দেশের নাম ও বর্তমান কুয়ালালামপুরে অবস্থানের ঠিকানা সংযুক্ত করে তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি হটলাইন নম্বর চালু করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
মালয়েশিয়ায় বসবাসরত অভিবাসীদের প্রতি দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক চলতি লকডাউনে বৈষম্যমূলক ও বর্ণবাদী আচরণ করা হয়েছে বলে ‘লকড আপ ইন মালয়েশিয়া’স লকডাউন’ শিরোনামে ২৫ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি সম্প্রতি আল-জাজিরা টেলিভিশনে প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনটি প্রচারিত হওয়ার পর মালয়েশিয়া সরকার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন ও মিথ্যাচার’ অভিহিত করেছে। এ প্রতিবেদনে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বাংলাদেশি রায়হান কবির। এরপর থেকেই রায়হানের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছে মালয়েশিয়া।
নোটিশ জারির পর থেকে মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসীদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, তাদের ভিসা রিনিউ করা হবে। এমনকি যারা ডিটেনশন ক্যাম্পে আছেন তাদেরও নতুন কোম্পানিতে চাকরি দেয়া হবে। আবার যারা করোনার কারণে বাংলাদেশে আটকা পড়েছেন তারাও যেতে পারবেন। মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে।’
এদিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাতো সেরী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব প্রতিবেদনকে ‘নির্লজ্জ মিথ্যাচার’ দাবি করে আল-জাজিরা টেলিভিশনকে মালয়েশিয়ার জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া গণমাধ্যমটির কয়েকজনকে নোটিশ দিয়েছে দেশটির পুলিশের প্রধান কার্যালয় বুকিত আমান।
রায়হান কবিরের সুরক্ষার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ডয়চে হাইকমিশনার বলেন, ‘কূটনৈতিক রীতিনীতির আওতায় যা করা দরকার দূতাবাস তা করবে।’