ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ৫১ জন মুসল্লিকে খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ব্রেন্টন ট্যারান্টকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে সাজা কার্যকর করতে রাজি অস্ট্রেলিয়া। শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এমনটা জানিয়েছেন।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যায় অভিযুক্ত ব্রেন্টনকে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
গত বছরের মার্চে ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদ ও লিনউড মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের সময়ে আচমকাই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে চড়াও হয় কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী ব্রেন্টন ট্যারান্ট।
নামাজরত মুসল্লিদের উপরে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ৫১ জনকে খুন করে। নারকীয় সেই হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় গুরুতর আহত হন আরো ৪০ জন। পুরো হত্যাকাণ্ডই ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করে খুনি ট্যারান্ট।
নিউজিল্যান্ড হাইকোর্ট ৫১ জন নিরীহ মুসলিমকে হত্যার দায়ে ২৯ বছর বয়সী ব্রেন্টন ট্যারান্টকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেন।
নিউজিল্যান্ডে মৃত্যুদণ্ডের বিধান না থাকায় এই প্রথম কোনো ব্যক্তিকে এমন সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হল। সাজা খাটাকালীন খুনি ব্রেন্টন কোনো রকম প্যারোলে মুক্তির সুযোগও পাবে না বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি।
অস্ট্রেলিয়ার উচিত ব্রেন্টনকে নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে চরম সাজা কার্যকর করা এবং ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া।তাঁর কথায়, ক্রাইস্টচার্চের ঘটনায় নিউজিল্যান্ডকে অসম্ভব ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবার সহ সন্ত্রাসী ব্রেন্টনের নিরাপত্তার জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, ব্রেন্টনকে নিউজিল্যান্ড আদালত যে সাজা দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। কুখ্যাত খুনিকে দেশে ফিরিয়ে এনে সর্বোচ্চ সাজা কার্যকর করতে আমরা রাজি। এই সন্ত্রাসীকে কোনো দিনই ছাড়া হবে না। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে আলোচনাতেও রাজি।
আইনজীবী মহলের মতে, ব্রেন্টনকে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরিয়ে নেওয়াটা খুব সহজ নয়। কেননা অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে কোনো বন্দি বিনিময় চুক্তি নেই। তাই ক্রাইস্টচার্চ গণহত্যার নায়ককে ফিরিয়ে নিতে হলে দুই দেশের সংসদে বিশেষ আইন পাশ করাতে হবে।