ছবির ভদ্রমহিলা যথেষ্ট নম্র ভদ্র একজন মহিলা। তার উপস্থাপনা,বাচনভঙ্গি এবং একজন ডাক্তার হিসেবে তার পেশাদারি আচরণ সবাইকেই মুগ্ধ করেছে।
করোনা নিয়ে কথা বলার মতো অনেক দায়িত্বশীল মন্ত্রীদের চেয়েও তার কথা বার্তা পরিমার্জিত,রুচিশীল,প্রাণবন্ত বলে মনে হয়েছে। প্রতিটা দিন উনি যেভাবে মিডিয়া ফেইস করেছেন এবং জনগণের সামনে তথ্য উপস্থাপন এবং করণীয় সম্পর্কে অবহিত করেছেন তা প্রশংসার দাবীদার।
আর এদিকে আমাদের এই প্রজন্মের কিছু সুশীল বুদ্ধিবেশ্যা তার শাড়ির সংখ্যা নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে।
জঘন্য মনমানসিকতার মানুষগুলো কি জানে যে উনার স্বামী ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম বাংলাদেশের পাওয়ার সেক্টরের অন্যতম প্রধান জায়েন্ট কোম্পানি এনার্জি প্যাকের সম্মানিত চেয়ারম্যান।
যারা উনার জুতা টানার ক্ষমতা রাখেনা তারা আসছে শাড়ি গননা করতে, অথচ ওরা জানেনা যে এই ভদ্র মহিলা প্রতিবার যাকাত ও দেয় ২২হাজার শাড়ি। শত শত কোটি টাকা প্রতিমাসে কোম্পানির কর্মকর্তা কর্মচারিদের বেতন দেয় তার পরিবার। কখনো প্রচার করেছে?
তিনি কিন্তু একজন ডাক্তার এবং একজন প্রফেসর।
আসুন জেনে নেই উনার সম্পর্কে…
মীরজাদী সেব্রিনা বাংলাদেশী রোগতত্ত্ববিদ এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। তিনি ফাউন্ডেশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের ফেলো। ১৯৮৩ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করার পর বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। পরে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) থেকে রোগতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করে তিন বছর গবেষণা করেন। তিনি নিপসমে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। পরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
২০১৬ সালে সেব্রিনা ফ্লোরা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মহামারী সৃষ্টিকারী ভাইরাস ও রোগ বিস্তার প্রতিরোধে বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গবেষণা করেন।
মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব দ্য ন্যাশনাল পাবলিক হেল্থ ইনস্টিটিউটের সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ফাউন্ডেশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের একজন সম্মানিত ফেলো তিনি।
তার মত অনেক দক্ষ মানুষ আছে যারা কিনা তাদের দক্ষতা আমাদের দেশে না থেকে বিদেশে কাজে লাগাচ্ছে।
সে কিন্তু দেশের মাটিতেই দেশের মানুষের জন্যই তার শ্রম এবং মেধা দিয়ে যাচ্ছে।
তার মুল্যায়ন আমরা কতটুকো করতে পারছি?
এরকম শাড়ি তিনি প্রতিদিন ২২ টা করে কেনার ক্ষমতা রাখেন, এটা তার পার্সোনাল ব্যাপার, এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কি আছে!
করোনার উপদ্রবের এই দিনগুলোতে তিনি প্রচণ্ড ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন, সারা দেশের মানুষ সবশেষ তথ্য জানার জন্যে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। নিজে অসুস্থ থাকার পরেও দায়িত্বে অবহেলা করেননি বিন্দু পরিমান।
সত্যি দেশটা বড় অদ্ভুত!
লেখকঃ নাজমুল হাসান অভি