একটা প্রকল্প হাতে নিতে পারলেই বাজেট পাওয়া যায়,বাজেট পেলেই পেট ভরে, এর আগে মাসে মাসে নুতন তথ্য ফরম ছাড়তো,এটা পুরন করো, ওটা অমুকের প্রত্যন সত্যায়ন পত্র দাও,ছবি দাও,অনলাইনে পুরন করো এসব নিয়ে বুড়ো বুড়ো মানুষদের দৌড়া দৌড়ি করতে হয়েছে কালকের ছোকরা কর্তা ব্যাক্তিদের দারে দারে।
আর যারা মারা গেছেন তাদের স্ত্রীদের তো বিপত্তির শেষ নেই। তাতে কি একই ধরনের কাজ বার বার করিয়ে নানা প্রকল্পে ওনাদের তো দু পয়শা কামাই হয়।যেন মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে যুদ্ধ করাটাই অপরাধ হয়েছে।যদি কোন তথ্য নিতেই হয় তাহলে সরকারি কর্তারা মুক্তি যোদ্ধাদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে তা সংগ্রহ করবে। মুক্তিযোদ্ধারা এদেশের শ্রেষ্ঠ সম্মানী ব্যাক্তি,তদুপরি তাঁরা অত্যন্ত বয়:বৃদ্ধ প্রবীন।
তা্ঁরা বেশীরভাগই কম শিক্ষিত বা অশিক্ষিত অনেকে।৫০ বছর ধরে একের পপর এক তাঁদের এভাবে অমর্য্যাদাকর কষ্টদায়ক হয়রানী ইতিহাসে বিরল।এখন আবার বিজয় দিবস সহ জাতীয় দিবস গুলিতে ইউ এন ও, ডিসি সাহেবরা ডেকে নিয়ে সম্বর্ধনার নামে কালকের ছেলে সরকারী নেতা এবং সরকারী কর্তাদের বয়ান শুনিয়ে ভিখিরির মত এক প্যাকেট খাবার, ২০০/১০০ টাকা কখনও বা একখানা কম্বল হাতে ধরিয়ে দেয়।আমার লজ্জা হয় দুস্হ বেশে রনাঙ্গনের সেই সব সিংহ পুরুষ সহযোদ্ধাদের আজকের করুন অবস্হা দেখে।যদি সম্মান দিয়ে তাদের খাওয়াতেই হয় তো সেইভাবে সম্মানের সংগে উপযুক্ত ব্যাবস্হা করে খাওয়ান।যেমন করে নেতা মন্ত্রি বা আপনার পরম আত্মীয়দের খাওয়ান।
ভিখিরির মত নয়।যদি কোন উপহার দিতে হয় তাহলে সরকারি কর্মচারী দিয়ে তাঁর বাড়ীতে সেটা সম্মানের সাথে পৌছে দেন।নইলে দরকার নেই এভাবে অপমান করার।মনে রাখবেন এদের সর্বোচ্চ ত্যাগেই আপনারা সব বড় ছোট পদের মালিক,স্বাধীন ভূখন্ড পতাকার মালিক,আপনারা গাড়ী বাড়ী বিত্ত বৈভবের মালিক।নইলে পান্জাবীদের গোলামী করে তাদের সেলাম করে উচ্ছিষ্ট খেয়ে জীবন কাটতো জনাব। মুক্তিযোদ্ধাদের সালাম করে কথা বলুন নইলে বলবেন না।
আর যাচাই বাছাই থেকে মৃত্যুর পরেও রেহাই নেই।পারলে এরা কবরে এদের ফেরস্তা পাঠিয়ে সাওয়াল জবাব করতো যদি এমন কোন প্রকল্প থাকতো।স্বাধীনতার পরে ৪৯ বছর ধরেও শেষ হোল না এর আর হবে বলে ও মনে হয় না।যাচাই যারা করে ওসব প্রশ্নের উত্তর তারাও এতদিনে ভুলে গেছেন। আমার বয়স ৭৬ বহু স্মৃতিই ভূলে গেছি জীবনের।এখন ও পরিক্ষা যদি দিতে হয় ক্লাস ফাইবের পরিক্ষায় ও ফেল করবো নিশ্চিত।
আর এ কাগজ সে কাগজ ওসব কি সবার আছে এত বছরে?হয়তো কারো কারো থাকতে পারে।এবারই কি শেষ?কখন নূতন মন্ত্রি আসবেন তিনি হয়তো নুতন প্রকল্প হাজির করবেন আবার কোন বা নূতন দল সরকারে এসে তাদের মনের মত যাচাই বাছাই করবেন।সুতরাং এ প্রক্রিয়া চলমান বন্ধুরা। এক দিকে নুতন নুতন ভূয়া বা আসল জানিনা দলীয় লোক বা দূর্নীতির মাধ্যমে ঢোকানোর প্রক্রিয়া ও চলবে যেমন চলছে।সব থেকে বিপদ মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের।কার কাছে বলবো, সবাই সবই জানেন এও জানেন এভোগান্তির, এ অসম্মানের কোন শেষ নেই।
লেখকঃ শমিত জামান, সাংবাদিক-কলামিস্ট।