যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি, হয়ত জন্মই হয়নি সে সময় , কিংবা যাদের তখন হাটি হাটি পা পা শৈশব ছিল তারা যখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বা গল্প লেখেন তাদের কাছ থেকে বস্তুনিষ্ঠতা আশা করা যায়না।
মুক্তিযুদ্ধ এমন সব অর্বাচিনের হাতে পড়ে ক্রমেই ইতিহাসের মাত্রা ছেড়ে কল্পিত কিংবদন্তীতে রূপান্তরিত হতে চলেছে।
কল্পকাহিনী লিখতে যারা সরকারি প্রণোদনা পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করছে তারা ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক ইতিহাস বিকৃতি ঘটাবার একটা গূঢ় চক্রান্তে সামিল হচ্ছে।
প্রিন্স অব ডেনমার্ককে বাদ দিয়ে হ্যামলেট লেখার মতই হয়েছে পিআইবি প্রোনোদিত একটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গ্রন্থ যেখান থেকে শহীদ সিরাজুদ্দিন হোসেনকে মুছে ফেলা হয়েছে।তাতে অবশ্য তাকেঁ খর্ব করা যায়নি। তিনি আপন মহিমায় উজ্জল রয়েছেন এবং থাকবেন। অসির চেয়ে মশি যে শক্তিশালী তার অনন্য প্রমান রেখেছেন সিরাজুদ্দিন হোসেন।
যারা দেখেননি তারা জানেননা যে নন্দিত জননেতা শেখ মুজিবুর রহমান পল্টন ময়দানের বিশাল জনসভায় বাদমগরেব যে ভাষন দিলেন সেটার পূর্ণ বিবরণ সেদিনই বেলা দুটার সময় ইত্তেফাকের ভিতরের পাতায় ছাপা হয়ে গেলো। বরাবর এমনি হয়েছে। তাতেই প্রসারিত হয়েছে সেই দৈনিক আর বিকশিত হয়েছেন কিংবদন্তী শেখ মুজিব।
জনসভায় বক্তৃতা দেবার আগে নামাজের বিরতির সময় নেতা সেটা পড়ে নিলেন একবার। দেখলেন তিনি যা যা বলবেন ভেবেছেন তার সবই আছে তাতে। মুজিব এবং সিরাজুদ্দিন ছিলেন এমনি কায়া ও ছায়ার মত অবিচ্ছেদ্য।
বঙ্গবন্ধু মুজিবকে যেমন বাংলার ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যায়নি তেমনি মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস থেকে শহীদ সিরাজুদ্দিন হোসেনকেও মুছে ফেলা যাবেনা। এ নিয়ে তাঁর সন্তানদের ভাবনার কিছু নেই। এদিনে কোন কুশিলবের নিন্দা করতে চাইনা। কারও সেটা যদি ভুল হয়েও থাকে তাহলেও হয়েছে অত্যন্ত গর্হিত প্রমাদ। এমন ভুল করার অধিকার কারও নেই।
লেখকঃ সমিত জামান, কলামিস্ট।