কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার সাংবাদিক গাদা কোয়েইস এবং ওলা আল ফারেস সম্প্রতি নিহত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশগিকে নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করেন৷ সৌদি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক খাশগিকে ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে হত্যা করা হয়৷ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় পাঁচ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরবের আদালত৷
দুই নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তৎপর গোষ্ঠিটি তাদের সাফল্যের সঙ্গে যৌনতার সম্পর্ক দেখিয়ে এমন কথাও বলেছে যে, সতর্ক না হলে ‘যে কোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে৷’
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্টকে গাদা কোয়েইস জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, বিশেষ করে টুইটারে তার বিরুদ্ধে মূলত সৌদি আরব থেকে ব্যাপক হয়রানিমূলক তৎপরতা চালানো হচ্ছে৷ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৪০ হাজার টুইট করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ তবে তিনি জানান, অন্যায় প্রচারের মুখে তিনি থামেননি, রুখে দাঁড়িয়েছেন৷
দুজন সাংবাদিকই তাদের বিরুদ্ধে চলমান অপতৎপরতার বিষয়টি টুইটার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন৷ তবে এখনো তাদেরর পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি৷
সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে)-র ২০১৮ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়রানির শিকার সাংবাদিকদের দুই তৃতীয়াংশই নারী৷ সমীক্ষায় আরো দেখা যায়, অনেকের মনোজগতে ভার্চুয়াল জগতের হয়রানির মারাত্মক প্রভাব পড়ে৷ এর ফলে শতকরা ৬৩ ভাগ চরম মানসিক চাপ বা উদ্বেগে ভোগেন, ৩৮ ভাগ খবর প্রকাশে সাবধান হয়ে যান এবং আট ভাগ চাকরি হারান৷
মধ্যপ্রাচ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়রানিমূলক তৎপরতা নতুন কিছু নয়৷ আর সব দেশের মতো সেই অঞ্চলেও নারীরাই এসবের প্রধান শিকার৷
তবে আল জাজিরার দুই নারী সাংবাদিক অন্যায় তৎপরতার মুখে ভেঙে পড়ার পাত্রী নন৷ গাদা কোয়েইস ওপ-এডে লিখেছেন, ‘অনলাইনে এসব আক্রমণের বিরুদ্ধে আমি চুপ থাকবো না৷’