চীনের রাজধানী বেইজিং-এ ভয়াবহ বালুঝড় আঘাত হেনেছে। সোমবার সকাল থেকে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। চীনা আবহাওয়া ব্যুরো এই ঝড়কে গত এক দশকের সবচেয়ে খারাপ ঝড় বলে অভিহিত করছে।
অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়া ও চীনের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল থেকে প্রবল বাতাসের সঙ্গে আসা ধূলোর কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর ফলে বেইজিংয়ে বায়ূ দূষণের মাত্রা বেড়ে গেছে অনেকখানি।
ইতোমধ্যে এ ঝড়ে মঙ্গোলিয়ায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া অন্তত ৩৪১ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
চীনের আবহাওয়া অধিদপ্তর নাগরিকদের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেছে। কর্তৃপক্ষ বেইজিংয়ে হলুদ সতর্কতা জারি করেছে। অন্তর্দেশীয় মঙ্গোলিয়া থেকে আসা ধূলিঝড় বেইজিংকে ঘিরে থাকা গানসু, শানজি ও হেবেই প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে শহরের সকল অধিবাসীদের বাইরে কাজ পরিহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বালুঝড়ের ফলে হঠাৎ করেই চীনের বায়ূ দূষণ সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে গেছে। বাতাসে অতিরিক্ত বালুর কারণে দেশটির শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। শহরের প্রশাসন স্কুলগুলোকে বাইরের খেলাধুলা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে এবং যে সব নাগরিক নিঃশ্বাসের সমস্যায় ভুগছেন, তাদেরকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গোলিয়া থেকে আগত শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ এসব বালু বয়ে এনেছে। ঝড়ের কারণে ইতোমধ্যে মঙ্গোলিয়ায় ছয়জন নিহত হয়েছেন, নিখোঁজ রয়েছেন ৩৪১ জন। বেইজিং এর অধিবাসী ফ্লোরা জো বলেছেন, দেখে মনে হচ্ছে এটাই পৃথিবীর শেষপ্রান্ত। এরকম আবহাওয়ায় আমি সত্যিই থাকতে চাই না।
রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গ্লোবাল টাইমস পত্রিকা জানিয়েছে, আজ সোমবার বেইজিংয়ের বায়ুর মানের সূচক সর্বোচ্চ ৫০০ তে গিয়ে পৌঁছেছে। শহরের ছয়টি স্থানে পিএম১০ নামে পরিচিত উড়ন্ত কণার মাত্রা দাঁড়িয়েছে প্রতি কিউবিক মিটারে ৮ হাজার ১শ মাইক্রোগামে। এর ফলে দৃষ্টিসীমা দাঁড়িয়েছে ৩শ থেকে ৮শ মিটারের মধ্যে।
ফুসফুসে প্রবেশে সক্ষম আরও ছোট কণা পিএম২.৫ এর মাত্রাও অনেক বেড়ে গিয়েছে। সোমবার এর মাত্রা পৌঁছেছে প্রতি কিউবিক মিটারে ৩শ মাইক্রোগ্রামে। যা চীনের সাধারণ মাত্রা ৩৫ মাইক্রোমের চেয়ে অনেক বেশি।
সাম্প্রতি বেইজিংয়ের চারপাশে থাকা অঞ্চলগুলো তুলনামূলকভাবে আরো বেশি দূষণের শিকার হয়েছে। ৫ মার্চ পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরুর সময়ও বেইজিং ধূলোর কুয়াশায় ঢেকে গিয়েছিল।